Saturday, August 27, 2016

নারায়ণগঞ্জে অভিযানে জঙ্গিনেতা তামিমসহ নিহত ৩

প্রথম আলো টোয়েন্টিফোর.কম । নিউজ ডেক্স
 
ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।

কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিম (৩০) গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বলে পুলিশ দাবি করে আসছে। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল।  

২০১৩ সালে কানাডা থেকে আসার পর তামিম বাংলাদেশেই ছিলেন বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছিলেন। তার নির্দেশনায়ই গত ১ জুলাই জঙ্গিরা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি।  

গুলশান হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানার সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকার কল্যাণপুরে একটি আস্তানায় অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হন।  

এরপর শনিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় বড় কবরস্থানের পাশের একটি তিনতলা ভবন ঘিরে অভিযানে নামে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা থেকে এসে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল পাইকপাড়ার একটি বাড়ি ঘিরে এই অভিযান চালাচ্ছে।”

এরপর অভিযানে র্যাব ও জেলা পুলিশ সদস্যরাও যোগ দেন। ভোর থেকে ঘিরে রাখার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়।

সেখানে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন তখন সাংবাদিকদের বলেন, “ভবনটির ভেতরে ঢুকতে অভিযান শুরু হয়েছে।”

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির পর শব্দ কমে আসে।  এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাড়িতে থাকা তামিমসহ তিনজনের নিহত হওয়ার খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন।
খানিক পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামও তিনজনের মধ্যে তামিমের থাকার খবর খবর নিশ্চিত করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাকি দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

সন্ত্রাস দমনে গঠিত ডিএমপির এই শাখার প্রধান মনিরুল বলেন, “জেএমবির এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যে এই আস্তানার খোঁজ মেলে। এরপর এখানে ‘অপারেশন হিট স্টর্ম’ চালানো হয়।”  অভিযান শেষ হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানালেও পাইকপাড়ার ওই এলাকা বেলা ১১টার দিকেও ঘিরে রাখা ছিল। সেখানে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। 

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, “অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলেছে।”

তামিমকে গ্রেপ্তার করা গেলে জেএমবির ‘নতুন ধারার’ আদ্যোপান্ত বেরিয়ে আসবে বলে আশা করেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।   

গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণ-যুবকদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ ১০ জনের যে প্রথম তালিকা দিয়েছিল, তাতে সিলেটের তামিমের নাম এসেছিল। 

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার উপর ভিত্তি করে তাকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক বলা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে।

তবে আইএস-সংশ্লিষ্টতার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আইজিপি শহীদুল এক সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা বলে চিহ্নিত করেন। 

তিনি বলেছিলেন, “এখানে (গুলশান হামলা) মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। নিও জেএমবির নেতৃত্ব সে দিচ্ছে। এই তামিম চৌধুরীর পর যারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রধান তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করেছি।”

কানাডার পাসপোর্টধারী তামিম ২০১৩ সালের অক্টোবরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে গত ২ অগাস্ট জানিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল।

তামিম সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর নাতি। মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে স্থানীয়দের তথ্য। 

তামিমের বাবা শফি আহমদ জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি সপরিবারে কানাডায় পাড়ি জমান।

তামিমের মতোই ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের জন্য। তিনি আরেক জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে পুলিশের দাবি। 

তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ


Share:

0 comments:

Post a Comment

AD

Popular Posts

আগামীকালের ইফতার সময়

AD

Blog Archive

Definition List

Support

আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে

Name

Email *

Message *

বিজ্ঞাপন