প্রথম আলো টোয়েন্টিফোর.কম
স্বাস্থ্য ডেক্স: আহ্, গ্যাস্ট্রিক যদি না থাকতো। এই আশা আমাদের সমাজের শতকরা ৮০-৯০ জন মানুষের। আসলেই কি গ্যাস্ট্রিক না থাকা সম্ভব? না, গ্যাস্ট্রিক না থাকা সম্ভব না। কারন মেডিকেলের ভাষায় গ্যাস্ট্রিক মানে হলো পাকস্থলী। কিন্তু আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মানুষ গ্যাস্ট্রিক বলতে যা বুঝায় সেটি হলো গ্যাস্ট্রিক আলসার। চলুন তাহলে গ্যাস্ট্রিক আলসার সম্পর্কে জেনে নেই-
গ্যাস্ট্রিক আলসার কি?
দীর্ঘদিন ধরে পাকস্থলীর ভিতরের স্তরে ঘা থেকে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয় তাকে গ্যাস্ট্রিক আলসার বলে। বেশিরভাগ সময় পাকস্থলীর অ্যান্ট্রাম নামক অংশের দিকে হয়।
যেসব কারনে গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়:
১. হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়ার কারনে গ্যাস্ট্রিক আলসার হতে পারে।
২. খাবারে অনিয়ম করলে বা নিয়মিত নির্দিষ্ট সময়ে খাবার না খেলে।
৩. ভাজা-পোড়া খাবার বা তৈলাক্ত খাবার বেশি খেলে।
৪. দীর্ঘদিন ধরে কারো পাকস্থলীতে ঘা থাকলে।
৫. উচ্চ মাত্রার ব্যথার ওষুধ ব্যবহারকারীদের হতে পারে।
৫. ধূমপান।
যাদের ঝুঁকি বেশি:
১. নারীদের তুলনায় পুরুষদের গ্যাস্ট্রিক আলসার বেশি হয়।
২. ধূমপায়ীদের গ্যাস্ট্রিক আলসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
রোগ নির্ণয়:
১. সাধারণত রোগের উপসর্গ দেখেই গ্যাস্ট্রিক আলসার নির্ণয় করা যায়।
২. নিশ্চিত হওয়ার জন্য এন্ডোস্কপি করা যেতে পারে।
৩. রোগ নির্ণয়ে এইচ.পাইলরি কিট টেস্ট হচ্ছে আধুনিক পদ্ধতি।
চিকিৎসা:
১. যাদের হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া দিয়ে গ্যাস্ট্রিক আলসার হয় তাদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শমত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা আবশ্যক। মনে রাখতে হবে ওষুধ নিয়ম মেনে গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে চিকিৎসা ফলপ্রসূ হবে না এবং পরবর্তীতে রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
২. এছাড়া রোগীকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। নিয়মিত ও সময়মত খাবার গ্রহণ করতে হবে। ভাজা পোড়া ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। খাবারের সাথে সাথে বেশি পরিমাণে পানি খাওয়া যাবে না এবং খাবার গ্রহণের পরপরই ঘুমাতে যাওয়া যাবে না।
৩. সব ধরণের নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে। ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
লেখক: ডাঃ শেখ মইনুল ইসলাম, চিকিৎসক ও তরুণ উদ্যোক্তা। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, হিউম্যান এইড বাংলাদেশ।