Thursday, May 24, 2018

ইলিয়াস আলী কি সত্যিই বেঁচে আছেন?

নিখোঁজ ইলিয়াস আলী
৬ বছর পর আবার আলোচনায় নিখোঁজ ইলিয়াস আলী। গত সোমবার ভোররাতে ডিবি পুলিশের একটি দল বনানীতে ইলিয়াস বাসভবনে অভিযান চালাতে যায়। কিন্তু নীচের দারোয়ান ‘সিলেট হাউসের’ গেট না খোলায় ভোর ৪টার দিকে সাদা পোশাকের লোকজন চলে যায়। ডিবি পুলিশ আসার খবর পেয়ে ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা, বিএনপির নেতাদের টেলিফোন করেন। তিনি দারোয়ানকেও মূল গেট না খোলার জন্য নির্দেশ দেন। পরদিন, গতকাল মঙ্গলবার ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা ছুটে যান ইলিয়াস আলীর বাসভবনে, যেখানে তাঁরা ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। ডিবির লোকজন সেখানে কেন গিয়েছিল, কিংবা আদৌ গিয়েছিল কিনা? এই প্রশ্নের পাশাপাশি, প্রশ্ন উঠেছে, তাঁর বাসায় কি এমন গুপ্তধন আছে যে ডিবি পুলিশ যাওয়া মাত্র অস্থির হয়ে উঠলেন ইলিয়াস আলীর স্ত্রী?

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলী। তাঁর গাড়ি পাওয়া যায় মহাখালীতে। ইলিয়াস আলীর সঙ্গে তাঁর ড্রাইভারও নিখোঁজ আছেন। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হবার পর থেকেই বিএনপি অভিযোগ করে আসছে ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। ইলিয়াস আলীর স্ত্রী সেসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রীও তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার জন্য তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করার জন্য নির্দেশ দেবেন।

কিন্তু গত ৬ বছরে ইলিয়াস আলীর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বিএনপির অনেক নিখোঁজ নেতাকেই বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে পাওয়া গেছে। বিএনপির আরেক নেতা সালাউদ্দিন আহমেদকে নিখোঁজ হওয়ার বেশ কিছুদিন পর ভারতে পাওয়া যায়। অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য এখন তিনি ভারতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু ইলিয়াস আলীর ক্ষেত্রে এসব কিছুই ঘটেনি। তাঁর স্ত্রী সহ আত্মীয় স্বজন ধরেই নিয়েছেন তিনি আর নেই। কিন্তু একটা মানুষ যদি মারাও যায় তাঁর তো একটা ট্রেস পাওয়া যাবে। ইলিয়াস আলীর ক্ষেত্রে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি।

আবার একটা পরিবারের অভিভাবক চলে যাওয়ার পর ঐ পরিবারে যে পরিবর্তন, সেটাও ইলিয়াস আলীর পরিবারে দেখা যায়নি। ইলিয়াস আলীর দুই ছেলেই লন্ডনে পড়াশুনা করছে। মেয়ে মায়ের সঙ্গে থাকে। গত ৬ বছরে ইলিয়াস আলীর পরিবারে কোনো দৈন্যতাও চোখে পড়েনি কারও। ইলিয়াস আলীর স্ত্রীও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হয়েছেন।

তিনি এখন বিএনপির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ইলিয়াস আলীর বেঁচে থাকার নানা গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়ানো হয়। ইলিয়াস আলীর অন্তর্ধান দিনে তার  স্ত্রীও গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তাঁর বিশ্বাস ইলিয়াস আলী বেঁচে আছেন। সত্যি কি  ইলিয়াস আলী বেঁচে আছেন? রাজনৈতিক হয়রানির ভয়ে কি তিনি দেশের বাইরে কোথাও পালিয়ে আছেন? তার সঙ্গে কি পরিবারের যোগাযোগ আছে? তার ‘ সিলেট  হাউজে’কি এমন কোনো আলামত আছে যেটা থেকে প্রমাণ করা সহজ হবে যে, ইলিয়াস আলী গুম হননি বরং সরকারকে বিব্রত করতেই এই গুম নাটক সাজানো হয়েছে? সেই আলামতের সন্ধানেই কি ডিবি পুলিশ সোমবার রাতে ইলিয়াস আলীর বাড়িতে গিয়েছিলেন? একারণেই কি ইলিয়াস আলীর স্ত্রী লুনা বিষয়টিকে রাজনৈতিক অবয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন? এজন্যই কি বিএনপির নেতারা পরদিন ছুটে গেছেন ঐ বাড়িতে? এসব কোনো  প্রশ্নেরই উত্তর নেই। আর সে কারণেই ‘ইলিয়াস রহস্য’থেকেই যাচ্ছে রাজনীতির বিতর্কে

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার
Share:

রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম জানতে চাই?


ঢাকা: অপার মহিমার মাস রমজান। আত্মশুদ্ধি-আত্মগঠনের এ মাসে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তোষ অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রমজান মাসকে সঠিকভাবে পালনে করণীয় ও বর্জনীয়সহ নানা বিষয়ে জানার থাকে মুসল্লিদের।

পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফের আলোকে পাঠকের জিজ্ঞাসার উত্তর দেবেন বিশিষ্ট মুফাস্সিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী। এরইমধ্যে এই আয়োজনে প্রশ্নকর্তা পাঠকরা জেনে নিন তাদের উত্তর।

গোলাম আব্বাস  হাতিরপুল, ঢাকা।
প্রশ্ন: রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম জানতে চাই?
উত্তর: বার্ধক্য বা জটিল কোনো রোগের কারণে যার রোজা রাখার সামর্থ্য একেবারেই নেই এবং পরে কাজা করার সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই এমন ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া প্রদান করবেন। ফিদইয়া হলো, একজন মিসকিনকে দু’বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো বা এর মূল্য দেওয়া। অর্থাৎ পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্টকর হয় তারা এর পরিবর্তে ফিদইয়া তথা মিসকিনকে খাদ্য দান করবে।’ (সুরা বাকারা ২: ১৮৪)


এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৬)

যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেওয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। (আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৭)

নজরুল ইসলাম বরপা, নারায়গঞ্জ।
প্রশ্ন: কাদের উপর ফিদইয়া জরুরি নয়?
উত্তর:  দুই শ্রেণির মানুষ (অর্থাৎ দুর্বল বৃদ্ধ ও এমন রোগী, বাহ্যত যার রোজা কাজা করার শক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই) ছাড়া আরও যাদের জন্য রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ আছে (যেমন মুসাফির, গর্ভবতী ও শিশুকে স্তন্যদানকারিনী ইত্যাদি) তারা ওজরের কারণে রোজা না রাখলে রোজার ফিদইয়া দেবে না; বরং পরে কাজা করবে।

আর যদি ওজর অবস্থায় মারা যায় তাহলে তাদের ওপর কাজাও নেই, ফিদইয়ার অসিয়ত করাও জরুরি নয়। অবশ্য ওজর শেষ হওয়ার পর কাজার সময় পেয়েও যদি কাজা না করে থাকে অতঃপরমৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাহলে ওজরের পর যে ক’দিন রোজা রাখার সময় পেয়েছে সে ক’দিনের জন্য ফিদইয়ার অসিয়ত করে যেতে হবে। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৩-৪২৪)
   
মো. রাজ্জাক, দেওয়ানগঞ্জ, জামালপুর।
প্রশ্ন: রোজার কাজা করা সম্ভব না হলে অসিয়ত করে যাওয়া কি জরুরি?
উত্তর: ওজরবশত ছুটে যাওয়া রোজার কাজা করা সম্ভব না হলে মৃত্যুর আগে ফিদইয়া দেওয়ার অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি। অসিয়ত না করে গেলে ওয়ারিশরা যদি মৃতের পক্ষ থেকে এমনিতেই ফিদইয়া আদায় করে দেয় তবে আশা করা যায়, আল্লাহতায়ালা তা কবুল করবেন। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৪-৪২৫)

রেজাউল করিম, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
প্রশ্ন: যাদের ফিদইয়া দেওয়া যাবে?
উত্তর: এক রোজার ফিদইয়া একজন মিসকিনকে দেওয়াই উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকে দিলেও ফিদইয়া আদায় হবে। তদ্রুপ একাধিক ফিদইয়া এক মিসকিনকেও দেওয়া জায়েজ। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪২৭)

কাশেমী, শেরপুর সদর, শেরপুর।
প্রশ্ন: কাদের ফিদইয়া দেওয়া হলে আদায় হবে না?
উত্তর: ছোট বাচ্চা বা নাবালককে খাওয়ালে ফিদইয়া আদায় হবে না। (ফাতাওয়া খানিয়া : ২/২০)

মো. আবদুল মান্নান, জুরাইন, ঢাকা।
প্রশ্ন: সুস্থতা ফিরে ফেলে ফিদইয়ার বিধান?
উত্তর: অক্ষম বৃদ্ধ ও মৃত্যুমুখে পতিত রোগী যদি সুস্থতা ফিরে পায় এবং আবার রোজা রাখতে পারে তাহলে তাদের ছুটে যাওয়া রোজাগুলোর কাজা করতে হবে। এক্ষেত্রে আদায়কৃত ফিদইয়ার জন্য আলাদা সওয়াব পাবে। (আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৭)

জবাব প্রদানে: মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী
লেখক: বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি

সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
Share:

AD

Popular Posts

আগামীকালের ইফতার সময়

AD

Blog Archive

Definition List

Support

আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে

Name

Email *

Message *

বিজ্ঞাপন