প্রথমআলোটোয়েন্টিাফোর.কম ডেক্স: অষ্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো খোলা বুকে নারীদের এক ব্যতিক্রমী বনভোজন। এতে ৮০০ নারী যোগ দেন। খোলা বুকে শীতল বাতাসের পরশ লাগাতে ও কেবল পুরুষরাই খোলা বুকে বাইরে যেতে পারবে এমন ধারণাকে বদলে দিতেই এধরনের আয়োজন করা হয়।

গত ১৭ জানুয়ারি ২০১৬ (রোববার) বিকেলে ব্রিসবেনের ওয়েস্ট ইন্ডস ওরলেইগহ পার্কে জো বাকলেই লেননক্স (২২) ও আমান্ডা হাওয়ারথের (২১) উদ্যোগে কোনো অপ্রতিকর ঘটনা ছাড়াই বনভোজনটি এই বনভোজনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ৮০০ নারী এই বনভোজনে অংশ নেন এবং আরো ১৬০০ নারী এই ব্যতিক্রমি আয়োজনে অংশগ্রহণের আগ্রহ দেখিয়েছেন। অবশ্য এই আয়োজন শেষে ৩৪০০ জন নারীকে পরবর্তী আয়োজনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এই অনুষ্ঠানের আয়োজকরা।

এবার শুধু নারীরা অংশ গ্রহণ করলেও পরবর্তীতে পুরুষদেরকেও এই আয়োজনে অংশ গ্রহণের জানানো হবে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
এই আয়োজন সম্পর্কে আমান্ডা হাওয়ার্থ বলেন, জানুয়ারি মাসে অষ্ট্রেলিয়াতে প্রচণ্ড গরম পড়ে। তাই একদিন বাকলেইকে বলি, আমরা নগ্ন বুকে একটি বনভোজনের আয়োজন করবো। আমাদের সহপাঠীরা বনভোজনে এসে বুক নগ্ন করবে। এতে আমরা চমৎকার একটি বিকেল উপভোগ করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে খুব সামান্য প্রচারণা আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমাদের ফেসবুক পেজটি শুধুমাত্র নারীদের জন্য উন্মুক্ত ছিলো। তবে নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা বেশ চিন্তিত ছিলাম। কারণ ফেসবুকে আমাদের ব্যাপক হুমকি দেওয়া
এই বনভোজনটি সফলভাবে আয়োজন করার পর আমান্ডা বলেন, সারা বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নগ্ন বুকে কিভাবে আন্দোলন করা যায় সেই বিষয়েও আমরা আলোচনা করেছি।

নগ্ন বুকের বনভোজন আয়োজন সম্পর্কে তাদের ফেসবুক পেজে এক হাজার নারী মন্তব্য করেছে। তাদের মধ্যে এক নারী মন্তব্য হলো, বাচ্চারা কী সাংঘাতিক কাণ্ড করেছে তোমরা। এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে নারীরা এমন পদ্ধতিতে দৃষ্টি আকর্ষণের প্রযোজন অনুভব করে। তোমরা যদি সমতা চাও তাহলে ছেলে মানুষী বন্ধ করতে হবে। তিনি আরো লিখেছেন, ‘তোমরা পর্নোগ্রাফি প্রচার করছো।

তার এই মন্তব্যের বিপরীতে এক নারীবাদী লিখেছেন, ‘ওহ, মাই গড! শিশুরা স্তন দেখে ভয়ে মারা যাবে।’
আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘সমঅধিকারের জন্য শুধু নারীদের সামনে বুক নগ্ন করা, আয়োজকদের কুটিলতা। পুরুষদেরও এতে অংশ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত। শুধু নারীদের সামনে বুক নগ্ন করা কোনো ব্যাপার না।’
পুরুষদের অংশ গ্রহণের দাবির ব্যপারে এক ব্যক্তি লিখেছেন, এই ছোট্ট আয়োজনের অংশগ্রহণকারীরা সবাই নারী; পুরুষরা এতে অংশ গ্রহণ করলে তারা নিরাপদ বোধ করবে না।’
এই মন্তব্যের প্রতিবাদে আরেকজন লিখেছেন, ‘ওখানে পুরুষ নাই কিন্তু নগ্নবুকের নারীদের হেনস্তা করার জন্য বাইরে পুরুষ ঠিকই আছে।’

ছবি দেখে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘আমি ভায়াগ্রা কিনতে সত্যি আগ্রহী। কারণ, নগ্ন বুকের একজন আমাকে উত্তেজিত করছে।’
ইলকা টোয়েল হোয়েক নামের এক নারী বলেন, ‘সামজিক মাধ্যমের এমন বিরূপ মন্তব্য দেখে আমি সিদ্ধান্ত নিই, যে কোনো উপায়ে এতে অংশ নিতে হবে। আমি যৌন নির্যাতনের শিকার। এমন একটি আয়োজন আমাকে ওই নির্যাতনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়েছে। আমরা খালি গায়ে আরাম অনুভব করেছি। সবাই একসঙ্গে মজা করেছি। আমাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে, কিন্তু পুরুষরা খালি গায়ে চলার স্বাধীনতা স্বাভাবিকভাবেই পেয়ে থাকে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এখানে আসার পর তারা আমাকে লিচু ও কেক খেতে দেয়। আমাকে স্তনে চিত্র আঁকতে বলে। এখানে অনেক সৃষ্টিশীল মানুষের সমাবেশ হয়েছিলো। সত্যি এটি নিরাপদ ও উৎসব মুখর আয়োজন ছিলো। প্রত্যেক মাসে একবার করে এই আয়োজন করা যায় কিনা তা নিয়ে সবাই আলোচনা করে।’
তবে এ ধরনের বনভোজনের বিরুদ্ধে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আয়োজকদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন অনেকে। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার বা হেনস্তা করা হয়নি।
0 comments:
Post a Comment